জনাব হাসান একজন ব্যবসায়ী। তিনি কামারপুকুর এলাকায় কিছু কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তার কারখানার পণ্যগুলো অন্য এলাকায় বিক্রি করেন। তিনি জানতে পারেন, রহমতগঞ্জ ব্যবসার জন্য একটি উত্তম জায়গা। তিনি সেখানে ব্যবসা শুরু করেন। পরে অন্য এলাকার ব্যবসায়ীরাও রহমতগঞ্জে ব্যবসায় শুরু করেন। কাজলদিঘি এলাকার ব্যবসায়ী গিবসন রহমতগঞ্জের চেয়ারম্যানের কাজে হস্তক্ষেপ করা শুরু করেন। পরিশেষে জনাব গিবসন রহমতগঞ্জের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা দখল করে শাসন শুরু করেন।
উদ্দীপকে জনাব গিবসনের কাজের সঙ্গে আমার পাঠ্যবইয়ের বাংলায় ইংরেজ কোম্পানির শাসন ক্ষমতা দখলের সাথে মিল রয়েছে।
বাংলায় এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হয়েছিল।
মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশীর যুদ্ধে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটে। তাঁর হত্যার মধ্য দিয়ে মূল ক্ষমতা চলে যায় ধূর্ত ও দুর্ধর্ষ ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভের হাতে। ১৭৬৫ সালে ক্লাইন্ড বাংলার দেওয়ানি লাভ করেন। ফলে বাংলায় ইংরেজ কোম্পানি শাসন শুরু হয়। বাংলার মানুষ পরাধীন হয়ে পড়ে। রবার্ট ক্লাইভ দ্বৈত শাসনব্যবস্থার মতো অভিশপ্ত পদ্ধতি চালু করেন। এই অদ্ভুত শাসনব্যবস্থায় ক্লাইভ বাংলার নবাবের ওপর শাসন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং রাজস্ব আদায় ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত করেন কোম্পানির ওপর। এর ফলে নবাব পেলেন ক্ষমতাহীন দায়িত্ব আর কোম্পানি লাভ করল দায়িত্বহীন ক্ষমতা। এটা ছিল ইংরেজ কোম্পানির ক্ষমতা দখলের প্রভাব। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে এর প্রভাব ছিল ভয়াবহ। দ্বৈতশাসনের ফলে অতিরিক্ত করের চাপ ও কর্মচারীদের অর্থের লালসায় বাংলায় দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত এ দুর্ভিক্ষে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোকের মৃত্যু হয়। তবে ইংরেজ কোম্পানি শাসন ক্ষমতায় আসায় কিছু ক্ষেক্রো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছিল। শিক্ষার ক্ষেত্রে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা, সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন- রেল, ডাক ও তার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা যায়, যা পরবর্তীতে নবজাগরণের সূত্রপাত ঘটেছিল।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে জনাব গিবসনের কাজের বহুমাত্রিক প্রভাব বাংলায় পড়েছিল।
আপনি আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন, যেমনঃ
Are you sure to start over?